IQNA

মদীনার ঐতিহাসিক জান্নাতুল বাকী কবরস্থান

23:05 - June 23, 2018
সংবাদ: 2606044
মদীনার জান্নাতুল বাকী মুসলিম জাহানের সবচেয়ে পবিত্রতম কবরস্থান। যেখানে শায়িত আছেন ইসলামের নক্ষত্রতূল্য ব্যক্তিত্বগণ। ঐতিহাসিক মদীনায় মসজিদুন্নবী ও রাসূলের (সা.) রওজা মোবারকের পার্শ্বে অবস্থিত এ কবরস্থানটি।


বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: জান্নাতুল বাকী ইসলামের প্রথম কবরস্থান। রাসূলের (সা.) আহলে বাইতের (আ.) ৪ মাসুম ইমামের মাজার রয়েছে মুসলিম জাহানের এ সবচেয়ে পবিত্রতম কবরস্থান। এ চার মাসুম ইমাম (আ.) হলেন যথাক্রমে হযরত ইমাম হাসান মুজতাবা (আ.), ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.), ইমাম মুহাম্মাদ বাকের (আ.) এবং ইমাম জাফর সাদীক (আ.)। নিম্নে আমরা এ পবিত্রতম কবরস্থানে ইসলামের যে সব মহামানব শায়িত আছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজনের নাম ও সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরছি-

১- উসমান বিন মাজউন (রা.)- তিনি প্রথম মুহাজির; যিনি মদীনায় ইন্তেকাল করেন এবং রাসূল (সা.) নিজেই তার জানাযার নামায পড়ান এবং নিজেই তাকে কবরে শায়িত করেন।

২- ফাতেমা বিনতে আসাদ (রা.)- তিনি আমিরুল মু’মিনিন আলীর (আ.) মাতা। তিনিই মানবেতিহাসে প্রথম নারী যাকে আল্লাহ তায়ালা স্বীয় সন্তান ভূমিষ্ঠের জন্য কাবা ঘরের মধ্যে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি রাসূলের (সা.) মাতার ইন্তেকালের পর পালিত মাতার ভূমিকা পালন করেন। এ কারণে রাসূল (সা.) তাকে স্বীয় মাতার সম্মান দিয়েছেন। এ মহীয়সী নারী ইন্তেকালের পর রাসূল (সা.) তাকে কবরে শোয়ানোর পূর্বে নিজেই কবরে শায়িত হন; যাতে তার সম্মানে আল্লাহ তাকে কবরের আযাব থেকে মুক্ত রাখেন।

৩- সায়াদ বিন মায়াজ (রা.)- তিনি রাসূলের (সা.) একনিষ্ঠ ও ঘনিষ্ঠ সাহাবীদের অন্তর্ভূক্ত। তিনি ইসলামের সব যুদ্ধে রাসূলের (সা.) পার্শ্বে থেকে নজিরবিহিন ত্যাগ ও সাহসিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার দাফনে শরিক হওয়ার জন্য আল্লাহ আসমান থেকে ৯০ হাজার ফেরেশতা নাযিল করেন।

৪- হালীমা সাদিয়া (রা.) - এ পাক ও পূণ্য নারীটি রাসূলের (সা.) দুগ্ধ মাতা হিসেবে পরিচিত। রাসূল (সা.) জন্মের পর যখন তার স্নেহময়ী মাতা ইন্তেকাল করেন; তখন তাকে দুধ খাওয়ানো জন্য রাসূলের (সা.) দাদা আব্দুল মুত্তালেব কয়েকজন নারীকে নিয়ে আসেন। কিন্তু রাসূল (সা.) উক্ত নারীদের কারও দুধ পান করেন নি।ফলে আব্দুল মুত্তালেব ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। অত:পর কেউ সন্ধান দিল যে একজন পূণ্যবান ও পরিশুদ্ধ নারী আছেন; যাকে এ গুরুদায়িত্ব দেয়া যেতে পারে। তখন হালীমেহ সায়িদেহকে আনা হয় এবং রাসূল (সা.) সাগ্রহে তার দুধ পান করেন। রাসূল (সা.) শিশুকালে এ মহীয়সী নারীর স্নেহে প্রতিপালিত হন।

৫- হযরত আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব- তিনি রাসূলের (সা.) শ্রদ্ধাভাজন চাচা এবং কাবা ঘরের জিয়ারতকারীদের মাঝে পানি পরিবেশনকারী ছিলেন। কুরাইশ বংশে তার ব্যাপক খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা ছিল। দ্বিতীয় খলিফার সময় খরা দেখা দিলে তিনি হযরত আব্বাসের ওসিলা দিয়ে বৃষ্টি কামনা করায় আকাশ থেকে বৃষ্টি শুরু হয়।

৬- ইবরাহিম ইবনে মুহাম্মাদ- রাসূলের (সা.) পুত্র সন্তান। সে মাত্র ১৮ মাস বয়সে ইন্তেকাল করেন এবং রাসূল (সা.) তাঁর ইন্তেকালে প্রচুর শোক ও আহাজারী করেন।

৭- রাসূলের (সা.) তিন কন্যা জয়নাব, রুকাইয়া ও উম্মে কুলসুম।

৮- আবু সাইদ খুদরী- তিনি বিশিষ্ট সাহাবী এবং হাদীসবেত্তা ছিলেন।

৯- হযরত উম্মুল বানীন- তিনি আমিরুল মু’মিনিন আলীর (আ.) স্ত্রী এবং কারবালায় ইমাম হুসাইনের (সা.) বাহিনীর সেনাপতি হযরত আব্বাস আলামদারের মাতা।

১০- এছাড়া মহানবীর (সা.) কয়েক শত ঘনিষ্ঠ সাহাবীর কবর এখানে রয়েছে।

captcha