পবিত্র কুরআনের ৫২তম সূরার নাম ‘তূর’। ৪৯ আয়াত বিশিষ্ট এই সূরাটি ২৭ পারায় অবস্থিত। সূরা তূর, হচ্ছে মাক্কী সূরার অন্তর্ভুক্ত। নাযিলের ক্রমানুসারে ৭৬তম সূরা যা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর উপর নাযিল হয়েছে।
এ সূরার প্রথম আয়াতে ‘তূর’ (পর্বত)-এর প্রতি শপথের কথা বলা হয়েছে এবং এ কারণেই এ সূরাকে ‘তূর’ বলা হয়।
তূর সিনাই ফিলিস্তিনে অবস্থিত একটি পবিত্র ধর্মীয় স্থান। হযরত মুসা (আ.) সেই পাহাড়ে আল্লাহর সাথে কথা বলতেন এবং তাঁর প্রতি ঐ খানে ওহী নাযিল হত। কুরআনে "তূর" নামটি দশবার ব্যবহৃত হয়েছে।
তাফসির আল-মিজানের মতে, সূরা তূরের মূল বিষয় হচ্ছে, যারা সত্যের বিরোধিতা করে তাদের হুমকি দেওয়া। এই সূরায় কাফেরদের কেয়ামতের দিন তাদের জন্য যে শাস্তির পরিকল্পনা করা হয়েছে সে সম্পর্কে সতর্ক করেছে এবং শপথ গ্রহণের মাধ্যমে সেই শাস্তির ঘটনা নিশ্চিত ঘোষণা করেছে। এছাড়াও এই সূরায় আযাবের কিছু বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে, যা একটি সাধারণ এবং অবিচ্ছেদ্য আযাব; আর অন্যদিকে বেহেশতের কিছু নেয়ামতের বর্ণনা করা হয়েছে। যারা দুনিয়াতে সদয় আচরণ করেছে এবং একমাত্র আল্লাহকে বিশ্বাস করেছে, তাদেরকে বেহেশতের নেয়ামত সম্পর্কে সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে।
সূরা তূরের বিষয়বস্তুকে ছয় ভাগে ভাগ করা যায়।
কয়েকটি শপথের মাধ্যমে শুরু হওয়া সূরার প্রথম আয়াতগুলোয় খোদায়ী শাস্তি এবং কিয়ামতের লক্ষণ এবং জাহান্নামের আগুন এবং অবিশ্বাসীদের শাস্তির বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
এই সূরার আরেকটি অংশে বেহেশতে ঐশী নেয়ামত বর্ণনা করা হয়েছে যা ধার্মিক লোকদের জন্য অপেক্ষা করছে।
ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর নবুওয়ত সম্পর্কেও কথা বলা হয়েছে এবং তাঁর শত্রুদের অভিযোগের সংক্ষিপ্ত জবাব দেওয়া হয়েছে।
এই সূরায় আরেকটি বিষয় যা বিবেচনা করা হয়েছে তা হল একেশ্বরবাদ এবং আল্লাহর একত্ব এবং এই বিষয়ে শক্তিশালী ও সুস্পষ্ট প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে।
সূরার শেষের দিকে পুনরায় কিয়ামতের বিষয় এবং কিয়ামতের দিনের কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে এবং শেষে হযরত মুহাম্মাদ (সা.)কে ধৈর্য, সহনশীলতা এবং আল্লাহর তসবিহ ও প্রশংসা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং তাঁর প্রতি আল্লাহর সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।